অনলাইন ডেস্ক :: সুবিধা প্রত্যাশী নতুন কেউ আমার অফিসে এলে প্রথমেই তার চোখের দিকে তাকাতাম। তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করতাম তার রেঞ্জ কতো। সেই অনুযায়ী তাকে টাকা দিতাম। সন্তুষ্ট মনে ফিরে যেতেন অফিস থেকে। চোখ দেখেই আমি বুঝতে পারতাম কাকে কিভাবে ম্যানেজ করতে হবে।’
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত জিকে শামীম এমন তথ্যই দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন এক কর্মকর্তার কাছ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগ নেতা পরিচয় দেওয়া ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে। এরপর তাঁর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্সের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র, মানিলন্ডারিং ও দুর্নীতির মামলা হয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর শামীমকে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে মানি লন্ডারিং আইনে তাঁকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
ইতোমধ্যে শামীমের বিরুদ্ধে করা অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ দুর্নীতির মামলায় সাত দিন করে রিমান্ডে শেষে গত ৭ নভেম্বর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ২১ অক্টোবর শামীম ও তাঁর মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই দিন খালেদের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক। এ মামলায় তাঁকে ২৭ অক্টোবর রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে জিকে শামীম কারাগারে রয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদকারী এক কর্মকর্তা জানান, জিকে শামীম কোনো ঝামেলা করেননি। তিনি যা জানেন সব বলেছেন তদন্তকারীদের। কিভাবে সম্পদের মালিক হয়েছেন, কোন পেশার কাকে কাকে মাসোহারা দিতেন সব জানিয়েছেন।
জিকে শামীম বলেছেন, ‘আমার কাছে কেউ এলে প্রথমেই চোখের দিকে তাকাই। চোখ দেখেই আমি বুঝতে পারি কে কি চায়। কাকে কত টাকা ঘুষ দিলে খুশি হবেন সেটাও চোখের দিকে তাকিয়ে আন্দাজ করতে পারি।’
শামীম জানান, ‘আন্দাজ করে যাদেরকে টাকা দিয়েছেন তাদের সাবই খুশি মনেই অফিস থেকে বিদায় নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। এক কথায় ঘুষ বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছিলেন জিকে শামীম।’ কালের কণ্ঠ
পাঠকের মতামত: